ঢাকাসিটির দর্শনীয় স্থান সমুহ:

ঢাকাসিটির দর্শনীয় স্থান সমুহ:

চিড়িয়াখানা : কিভাবে যাওয়া যায়: 
ঢাকার সদরঘাট, গুলিস্তান, মতিঝিল, ফার্মগেট, গাবতলী হতে মিরপুর চিড়িয়াখানা গামী যে কোন বাস অথবা ট্যাক্সি, সিএনজি বা প্রাইভেটকার যোগে চিড়িয়াখানা যাওয়া যায়।
ঢাকা চিড়িয়াখানা(ইংরেজি: Dhaka Zoo) ঢাকার মিরপুরে স্থাপিত বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা। এটি বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান। ১৯৫০ সালে হাইকোর্ট চত্বরে জীবজন্তুর প্রদর্শনশালা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় চিড়িয়াখানাটি। পরবর্তীকালে ১৯৭৪ সালে বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তরিত হয় এটি। চিড়িয়াখানাটি উদ্বোধন ও সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন। বছরে প্রায় ৩০ লক্ষ দর্শনার্থী ঢাকা চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে থাকেন।
ইতিহাস
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ঢাকা শহরের শাহবাগে তৎকালীন নবাবরা একটি ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানার গোড়াপত্তন করেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর বাংলাদেশ বা তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে একটি চিড়িয়াখানার অভাব অনুভূত হয়। পঞ্চাশের দশকের শেষভাগে ঢাকার সুপ্রিম কোর্টের সামনে বর্তমান ঈদগাহ এলাকায় ৪-৫ একর জায়গা জুড়ে ছোট আকারের একটি চিড়িয়াখানা স্থাপন করা হয়। চিড়িয়াখানাটিতে একটি বড় পুকুর এবং পাড়ের খানিকটা জায়গা জুড়ে একটি বলাকা প্রদর্শনী ছিল। সেখানে রাজহাঁস, পাতিহাঁস, শীতের পরিযায়ী হাঁস এবং অন্যান্য পাখি ছিল। হাড়গিলা, সারস এবং ময়ূরও প্রদর্শিত হত। বানর, হনুমান আর হরিণ ছিল। সরিসৃপের মধ্যে অজগর ও কুমির ছিল প্রধান।
ঢাকায় একটি আধুনিক চিড়িয়াখানা স্থাপনের ব্যাপারে প্রথম সরকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে। তৎকালীন কৃষি, সহযোগিতা ও ত্রাণ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঢাকার উপকণ্ঠে একটি চিড়িয়াখানা ও উদ্ভিদ উদ্যান স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সে বছর ২৬ ডিসেম্বর প্রস্তাবনাটি চুড়ান্তভাবে ঘোষিত হয়। এরপর চিড়িয়াখানা স্থাপনের কোনপ্রকার উদ্যোগ ছাড়াই এক দশক পার হয়ে যায়। ১৯৬১ সালের ১১ মার্চ খাদ্য ও কৃষি বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের বরাতে এক উপদেষ্টা পরিষদের নাম ঘোষণা করা হয়। এ পরিষদের কাজ ছিল প্রস্তাবিত চিড়িয়াখানা ও উদ্ভিদ উদ্যান স্থাপন ও ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে সরকারকে পরামর্শ দান। তদানীন্তন পশুপালন সার্ভিসের পরিচালক এই পরিষদের সদস্য সচিব হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
বিস্তৃতি
ঢাকা চিড়িয়াখানার আয়তন প্রায় ৭৫ হেক্টর। চিড়িয়াখানার চত্বরে ১৩ হেক্টরের দুটি লেক আছে।
প্রাণী বৈচিত্র
চিড়িয়াখানা তথ্যকেন্দ্র হতে প্রাপ্ত তথ্য হতে জানা যায়, বর্তমানে ঢাকা চিড়িয়াখানায় ১৯১ প্রজাতির ২১৫০টি প্রাণী রয়েছে।
 



জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বোটানিক্যাল গার্ডেন:  

বোটানিক্যাল গার্ডেন...

রাজধানীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ঐতিহ্যবাহী ও আর্কষণীয় স্থান এবং পুরাকীর্তি। এসব স্থান পর্যটকদের আকর্ষণ করে দারুণভাবে। এর একটি হচ্ছে বোটানিক্যাল গার্ডেন। তাছাড়া ঘুরে বেড়াতে কে না ভালোবাসে-আর এই বেড়ানোটা যদি হয় ছুটির দিনে তাহলে তো কথাই নেই। পরীা, ল্যাব ও নানান কাজের টেনশন থেকে মুক্তি পেতে এবং নতুন বোটানিক্যাল্যমে পরবর্তী সপ্তাহের জন্য কান্ত মনকে পুনরায় উজ্জীবিত করতে একটি সুন্দর ও মনোরম স্থানে বেড়ানো সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। ঠিক তেমনি একটি বেড়ানোর স্থান হলো জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বা ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন।
জেনে নিন বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রয়োজনীয় তথ্য ও ঠিকানা-
বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর-১
প্রতিদিন খোলা থাকে সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা (মার্চ থেকে নভেম্বর), সকাল নয়টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা (ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি)।
প্রবেশমূল্য: পাঁচ টাকা। শিশুদের জন্য প্রবেশমূল্য দুই টাকা। কর্তৃপরে অনুমতি সাপেে শিাসফরে আসা শিার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য তিন টাকা।
ফোন: ৮০৩৩২৯২




রমনা পার্ক :এই উদ্যানটি ১৬১০ সালে মোঘল আমলে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই সময়ে রমনার পরিসীমা ছিল বিশাল এলাকা জুড়ে। মোঘলরাই রমনার নামকরণ করেন। পুরানো হাইকোর্ট ভবন থেকে বর্তমান সড়ক ভবন পর্যন্ত মোঘলরা বাগান তৈরী করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে কোম্পানী আমলে এ এলাকা জঙ্গলে পরিণত হয়। পরবর্তীতে ১৯ শতকে ব্রিটিশ শাসক এবং ঢাকার নবাবদের সহায়তায় এটির উন্নয়ন সাধন করা হয়। ঢাকা শহরের নিসর্গ পরিকল্পনার কাজ শুরু হয়েছিল ১৯০৮ সালে লন্ডনের কিউই গার্ডেনের অন্যতম কর্মী আর. এল প্রাউডলকের তত্ত্বাবধায়নে। শহরের সেই নিসর্গ পরিকল্পনার ফল ছিল রমনা পার্কের উন্নয়ন। ২০ বছর লেগেছিল সে কাজ শেষ হতে। 
বর্তমানে রমনা পার্কে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়। রমনার বটমুলে ছায়ানটের আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন অনেক জনপ্রিয়।


নিসর্গপ্রেমীদের জন্য রমনা অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। শহরের মূল কেন্দ্রে এর অবস্থান। শহরের বুকে এমন প্রকৃতি উপভোগের অন্যতম প্রখ্যাত ও ঐতিহাসিক উদ্যান আর নেই। পার্কে প্রবেশের কোনও রকম প্রবেশ ফি লাগে না।
আহসান মঞ্জিল জাদুঘর : আহসান মঞ্জিল পুরোনো ঢাকার ইসলাম পুর এলাকায় অবস্থিত। এর ঠিক দক্ষিণদিকে রয়েছে বুড়িগঙ্গা নদী। গেট দিয়ে প্রবেশ করে রাস্তার পার্শ্বে দেখবেন ফুলের বাগান। লাল-নীল-বেগুনি রঙের ফুলের সমারোহ দেখে মুগ্ধ হবেন। মঞ্জিলের সামনে বিশাল সবুজ মাঠ। মঞ্জিল থেকে বড় একটা সিড়ি নেমে এসেছে মাঝে। মাঠের ঠিক সামনেই নদী। অসাধারন দৃশ্য।

উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক পর্যন্ত ঢাকায় তো বটেই পূর্ব বঙ্গেও প্রভাব বিস্তার করেছিল আহসান মঞ্জিল। ১৮৭২ সালে নবাব আব্দুল গনি বাড়িটিকে পুননির্মাণ করে নাম দিয়েছিলেন আহসান মঞ্জিল। ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এ বাড়িতে নবাব আহসান উল্লাহ বাস করতেন। এখানে প্রাসাদের উপরে অনেক সুদৃশ্য গম্বুজ রয়েছে। বর্তমানে এটি একটি জাদুঘর। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনাথী এ জাদুঘর দেখতে এসে থাকেন। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত
এখানে দেখবেন গত শতাব্দির প্রথম দিকের অনেক উল্লেখযোগ্য নির্দশন। ব্রিটিশ ভারতীয় ঢাকার উপাধিপ্রাপ্ত নওয়াবদের বাসস্থান ছিল এই মঞ্জিলটি। আর এখানে গেলে মৃদুমন্দ সুরের মূর্ছনার সাথে সাথে স্বচক্ষে দেখতে পারবেন তখকার নওয়াবদের বাসস্থান এবং নানান স্মৃতিচিহ্ন।
ইতিহাস
অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে জালালপুর পরগনার জমিদার শেখ ইনায়েতউল্লাহ আহসান মঞ্জিলের বর্তমান স্থান রংমহল নামে একটি প্রমোদভবন তৈরি করেন। পরবর্তীতে তাঁর পুত্র রংমহলটি এক ফরাসি বণিকের নিকট বিক্রি করে দেন। বাণিজ্য কুটির হিসাবে এটি দীর্ঘদিন পরিচিত ছিল। এরপরে ১৮৩৫-এ বেগমবাজারে বসবাসকারী নওয়াব আবদুল গণির পিতা খাজা আলীমুল্লাহ এটি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন। নওয়াব আবদুল গণি ১৮৭২ সালে প্রাসাদটি নতুন করে নির্মাণ করান। নতুন ভবন নির্মাণের পরে তিনি তাঁর প্রিয় পুত্র খাজা আহসানউল্লাহর নামানুসারে এর নামকরণ করেন আহসান মঞ্জিল। ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে এই ভবনটি ভেঙ্গে পড়ায় তা পূনঃনিমাণ করা হয়।

যেভাবে যেতে হবে
এখানে যেতে হলে আপনাকে প্রথম সদরঘাট পুরান ঢাকাই যেতে হবে। সেখান থেকে হেঁটে অথবা রিকশায় করে আপনি চলে যেতে পারবেন আহসান মঞ্জিল। আহসান মঞ্জিল জাদুঘর খোলা থাকে

জাতীয় জাদুঘর

১৯১৩ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা জাদুঘর নামে যাত্রা শুরু করেছিল জাতীয় জাদুঘর। তৎকালীন বাংলার গভর্নর লর্ড কারমাইকেল ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটি কক্ষে এর উদ্বোধন করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৮৩ সালে একে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর নামে অভিহিত করা হয়।

চারতলা এই ভবনের স্থাপত্য নকশা অত্যন্ত নজরকাড়া। ২০ হাজার বর্গমিটারের এই ভবনটির ৪৬টি গ্যালারিতে রয়েছে প্রায় ৮৩ হাজারের বেশি নিদর্শন। কেবল বাংলাদেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ জাদুঘর। নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের ইতিহাস ও সভ্যতার প্রতিটি ধাপের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে রয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে।
টিকেট কেটে মূল ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে জাদুঘর ভবনের। ভবনটির চারদিকে রয়েছে প্রচুর গাছপালা, যা এক মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ভবনের প্রবেশদ্বারে রয়েছে সুসজ্জিত দুটি কামান। ভবনটির ভেতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে নান্দনিক নভেরা ভাস্কর্য। নিচতলায় রয়েছে শুভেচ্ছা স্মারক বিপণি, সে সঙ্গে রয়েছে ব্যাগ রাখার স্থান ও কয়েকটি খাবারের দোকান। সিঁড়ি বেয়ে ওপরের দিকে উঠলেই পাবেন গ্যালারি নির্দেশক। প্রতিটি তলাতেই রয়েছে এই নির্দেশক, যা দর্শনার্থীকে প্রতিটি তলার গ্যালারি সম্পর্কে অবগত করে।
জাদুঘরের প্রথম তলাটি যেন পুরো বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ। বাংলাদেশের মানচিত্র দিয়ে শুরু হওয়া এই তলাতে আরো দেখতে পাবেন বাংলাদেশের গাছপালা, প্রাণী, সুন্দরবন, উপজাতীদের জীবনধারা, খনিজ শিলা, ভাস্কর্য, মুদ্রা এবং প্রাচীন যুগের নানাবিধ ভাস্কর্যের।


ভবনটির দ্বিতীয় তলায় দেখতে পাবেন বাংলাদেশের সভ্যতা ও ইতিহাসের ক্রমবিবর্তন। বিভিন্ন সময়ের অস্ত্র, বাদ্যযন্ত্র, চীনামাটির হস্তশিল্প, কুটিরশিল্প, পাণ্ডুলিপি, সমকালীন শিল্পকলা এবং বাংলাদেশের নানাবিধ ঐতিহ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে এই তলা।
ভবনের তৃতীয় তলায় রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্যক্তির প্রতিকৃতি, চিত্রকর্ম ও বিশ্বসভ্যতার নানা নিদর্শন।
বাংলাদেশ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের জন্য শিক্ষাভ্রমণের এক উপযুক্ত স্থান হতে পারে বাংলাদেশ জাদুঘর। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দলবেঁধে প্রায়ই আসেন এখানে। তেমনি একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মাহফুজ সালেকীন বর্ষণ। তিনি জানালেন, পাঠ্যপুস্তকে পড়া বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো সামনাসামনি দেখার এ যেন এক বিরাট সুযোগ। বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞানলাভের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই জাদুঘরে আসা উচিত বলে তিনি মনে করেন। কেবল শিক্ষার্থীরাই নয়, নানা বয়সের মানুষের আগমন ঘটে এখানে। ছোট ছোট বাচ্চাকে মা-বাবার হাত ধরে যেমন ঘুরতে দেখা যায় এখানে, তেমনি দেখা যায় প্রবীণ গবেষকদের। সব বয়সের মানুষের চাহিদা পূরণ করে আসছে এই জাদুঘর।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় কিছু গ্যালারির কাজ চলছে দেখা যায়। সে সম্পর্কে জাদুঘরের কর্মচারী ষাটোর্ধ্ব ইব্রাহিম মিয়া জানান, পুতুল নামে একটি নতুন গ্যালারির এবং বাদ্যযন্ত্র ও নকশিকাঁথার দ্বিতীয় গ্যালারি সংযুক্তির কাজ চলছে।
প্রতিদিন দর্শনার্থীর সংখ্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইব্রাহিম মিয়া বলেন, প্রতিদিন প্রায় দুইশ থেকে আড়াইশর মতো মানুষ আসে এখানে, দুপুরের পর থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়তে থেকে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে অন্যান্য দিনের চেয়ে লোকসমাগম বেশি হয় এখানে। কেবল বাংলাদেশিরাই নন, বিভিন্ন দেশের নাগরিকরাও আসেন জাদুঘর ভ্রমণে।
বাংলাদেশ নিয়ে গবেষণার কাজে আসা ব্রিটিশ নাগরিক ক্যালভিন ডোনাল্ডের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, কেবল দুদিনের সফরে বাংলাদেশে আগমন তাঁর। এত অল্পসময়ে পুরো বাংলাদেশ ভ্রমণ সম্ভব নয় বিধায় তাঁরই এক বাংলাদেশি বন্ধুর পরামর্শে জাদুঘর দর্শনে আসেন তিনি। বন্ধুর উপদেশ একেবারেই বিফলে যায়নি বলে মনে করেন তিনি। সে সঙ্গে আরো বলেন, বাংলাদেশ ইতিহাস-ঐতিহ্যে এতটা প্রাচুর্যময়, এখানে না এলে জানা হতো না তাঁর। বিদেশি নাগরিকদের সুবিধার্থে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ সাতজন গাইডের ব্যবস্থা করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের রয়েছে আনুমানিক ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার বইসংবলিত নিজস্ব গ্রন্থাগার। গবেষণার কাজে এই গ্রন্থাগার বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ ছাড়া রয়েছে জাদুঘর মিলনায়তন, যা বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার বা সভার কাজে ব্যবহার করা হয়।
বিশেষ দিনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে থাকে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ, তারই ধারায় কয়েক দিন আগে ৮ মে রবীন্দ্রনাথের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাতীয় দিবসগুলোতে চিত্রাঙ্কন, রচনা আবৃত্তি ও হাতের লেখার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যেখানে শিশু থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারে।

কীভাবে যাবেন
জাতীয় জাদুঘর শাহবাগ এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। আপনার এলাকা থেকে শাহবাগ রুটের যেকোনো বাসে করে চলে আসতে পারেন এখানে।
টিকেটের মূল্য
কাউন্টার থেকে টিকেট কেটে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। প্রধান ফটকের সামনেই অবস্থিত টিকেট কাউন্টার। যেখানে টিকেটের মূল্য ৩ থেকে ১২ বছর বয়সীদের জন্য পাঁচ টাকা, ১২ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য ১০ টাকা এবং বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য ৭৫ টাকা।
তবে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে, যেমনপয়লা বৈশাখ, ২৬ মার্চ, ২১ ফেব্রুয়ারি প্রভৃতি দিনে শিশু ও ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে প্রবেশের ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ।
দর্শনের সময়সূচি
বৃহস্পতিবার বাদে সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে জাদুঘর সবার পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত থাকে।
শনি থেকে বুধবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট এবং শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাদুঘর সবার জন্য খোলা থাকে।
মনে রাখুন
১. জাদুঘরের অভ্যন্তরে ছবি তোলা থেকে বিরত রাখুন। ফোন বন্ধ রাখার চেষ্টা করুন।
২. বাইরের খাবার বা পানি নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবেন না।
৩. নিদর্শনের শোকেসগুলোতে হাত রাখা থেকে বিরত থাকুন।
৪. ক্লান্ত হলে দর্শনার্থীদের জন্য রাখা সোফাগুলোতে বিশ্রাম নিতে পারেন।
৫. বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। এমন কিছু করবেন না, যাতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।

বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার:
বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার ২০০২ সাল থেকে দর্শণার্থীদের জন্য উন্মূক্ত করা হয়। থিয়েটার ভবনটি ৫ তলার মতো দেখতে হলেও এতে ৩ টি ফ্লোর রয়েছে। এর প্রথম তলা এবং দ্বিতীয় তলা নিয়ে থিয়েটার। এই থিয়েটারে মোট ২০০ জন দর্শক বসার ব্যবস্থা রয়েছে।
 প্রদর্শনীর বিষয়
থিয়েটারে ২টি বিষয়ের উপর চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। প্রথমটি ‍এ জার্নি টু ইনফিনিটি এবং দ্বিতীয়টি এই আমার বাংলাদেশ। প্রথম চলচ্চিত্রটি দ্বারা মহাকাশ সূর্য ও বিভিন্ন গ্রহ সমূহের ধারণা এবং দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটি দ্বারা বাংলাদেশের প্রকৃতি উৎপত্তি এবং গ্রামীণ জীবন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। থিয়েটারের অভ্যন্তরে কোন প্রকার খাদ্যদ্রব্য নিয়ে প্রবেশ করা যায় না। এছাড়া প্রদর্শনী চলার সময় মোবাইল ফোন, ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা ও আলো জালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং প্রদর্শনী শুরু হওয়ার পর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
 প্রদর্শনীয় মূল্য
থিয়েটারের সামনেই পূর্ব ও পশ্চিম পাশে দুটি করে মোট ৪টি কাউন্টার রয়েছে। থিয়েটারের টিকিট মূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা। তবে ২ বছরের নিচে বাচ্চার টিকিটের প্রয়োজন নেই। থিয়েটারের ভিতর একটি রাইড রয়েছে। নাম রাইড সিমুলেটর। এই রাইডে প্রতি ৫ মিনিটের জন্য ২০ টাকার টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। মূলত শো শুরু হওয়ার  ১ ঘন্টা পূর্ব থেকে পাওয়া যায়। এছাড়া অগ্রিম ও ই-টিকিট এর ব্যবস্থাও রয়েছে।
 সময়সূচী
বার
প্রদর্শনীর সময়
শনিবার, রবি, সোম, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার
১০.৩০টা, ১২:০০টা, ২:০০টা, ৩.৩০টা, ৫:০০টা ও ৬.৩০টা।
শুক্রবার
১০টা, ১১.৩০টা, ২.৩০টা, ৪:০০টা, ৫.৩০টা ও ৭:০০টা।
বুধবার
সাপ্তাহিক ছুটি
ই-টিকেট
টেলিটক মোবাইল ফোন-এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার-এর ই-টিকেট ক্রয়ের নিয়মাবলী :
টিকেট ক্রয় করতে এসএমএস প্রেরণ করবেন যেভাবে :
ধাপ-১:
মোবাইল-এর ম্যাসেজ অপশন-এ গিয়ে টাইপ করুন
Novo<স্পেস>তারিখ<স্পেস>শো কোড<স্পেস>টিকেটের সংখ্যা এবং ৬৬৮৬ নম্বরে প্রেরণ করুন
(বছর মাস দিন)
যেমন : কোন দর্শনার্থী ০৪ মার্চ ২০১৪ তারিখের ৩য় শো এর ২টি টিকেট কিনতে চান।
উদাহরণ : Novo<স্পেস>২০১৪০৩০৪<স্পেস>০৩<স্পেস>০২এবং ৬৬৮৬ নম্বরে প্রেরণ করুন
এসএমএস প্রেরণকারী ফিরতি এসএমএস-এ প্রদেয় টিকেট মূল্য সহ একটি পিন নম্বর পাবেন।

ধাপ-২ :
দর্শনার্থী সম্মত থাকলে পুনরায় ম্যাসেজ অপশন-এ গিয়ে টাইপ করুন
YES<স্পেস> পিন নম্বর এবং ৬৬৮৬ নম্বরে প্রেরণ করুন
দর্শনার্থীর মোবাইল-এ পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যালেন্স থাকলে নির্ধারিত টিকেটের মূল্য কেটে নিয়ে ফিরতি এসএমএস-এ শো এর নির্ধারিত তারিখ, সময় এবং টোকেন নম্বর জানিয়ে দেয়া হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার-এ প্রদর্শিত ৬টি শো এবং শো কোড নম্বর:
শনি-বৃহস্পতি

শুক্রবার
শো কোড
সময়
সাপ্তাহিক ছুটির দিন বুধবার

সরকার ঘোষিত ছুটির দিন বন্ধ
শো কোড
সময়
০১
সকাল ১০:৩০ টা
০১
সকাল ১০:০০ টা
০২
দুপুর ১২:০০ টা
০২
সকাল ১১:৩০ টা
০৩
বেলা ২:০০ টা
০৩
বেলা ২:৩০ টা
০৪
বিকাল ৩:৩০ টা
০৪
বিকাল ৪:০০ টা
০৫
বিকাল ৫:০০ টা
০৫
বিকাল ৫:৩০ টা
০৬
সন্ধ্যা ৬:৩০টা
০৬
সন্ধ্যা ৭:০০টা



শর্তাবলী :
·         প্রতিটি টিকেটের মূল্য ১০০ টাকা।
·         দর্শনার্থীগণ তিন দিনের অগ্রীম টিকেট ক্রয় করতে পারবেন।
·         একজন দর্শনার্থী তার ব্যবহৃত টেলিটক মোবাইল দিয়ে সর্বোচ্চ ৩টি টিকেট ক্রয় করতে পারবেন।
·         ই-টিকেট ক্রয়কৃত দর্শনার্থীকে অনুগ্রহপূর্বক শো শুরু হওয়ার ১ ঘণ্টা পূর্বে নভোথিয়েটার-এ উপস্থিত হয়ে এন্ট্রি স্লিপ সংগ্রহ করতে হবে।
·         ই-টিকেট ক্রয়ের ক্ষেত্রে ধাপ-২ এর কার্যক্রমটি দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করে টিকেট প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
 গাড়ী পার্কিং
থিয়েটারে আন্ডার গ্রাউন্ড গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে। পার্কিং চার্জ প্রত্যেক বাস ৩০ টাকা, কার ১০ টাকা এবং মোটর সাইকেল ৫ টাকা
 বিবিধ
থিয়েটারে পর্যাপ্ত পরিমাণ অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, নিরাপত্তা সরঞ্জাম এবং লোকবল সিকিউরিটি, নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছে। থিয়েটারের নিচতলায় পশ্চিম দিকে পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য পৃথক ভাবে ৮টি করে মোট ১৬ টি টয়লেট রয়েছে। নিচ তলায়  অবস্থান।
 ঠিকানা
বিজয় স্বরণীর দক্ষিণ পশ্চিম কোনায়  বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার অবস্থিত। এর পশ্চিম পাশে সামরিক জাদুঘর রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ফোননম্বর ৯১৩৮৮৭৮, ৯১৩৯৫৭৭, ৮১১১১৩৪ এবং ওয়েব সাইট www.novotheatre.gov.bd
শাহবাগ শিশু পার্ক


শাহবাগের শিশুপার্কটি ঢাকার সবচেয়ে প্রাচীন শিশু পার্ক, এর সবচাইতে যে বিষয়টি আপনাদের ভাল লাগবে তা হল এখানে সপ্তাহে একটি দিন সুবিধাবঞ্চিত ও অসচ্ছল শিশুদের বিনামূল্যে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র শাহবাগে অবস্থিত শাহবাগ শিশু পার্কটি শহীদ জিয়া শিশুপার্ক বা ঢাকা শিশুপার্ক হিসেবেও পরিচিত। ১৯৭৯ সালে শহীদ জিয়া শিশুপার্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য পাবলিক সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম এই শিশুপার্কটি ১৯৮৩ সাল থেকে বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের উদ্যোগে ১৫ একর জায়গার ওপর গড়ে উঠা এ পার্ক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। শিশু পার্কটিতে ১২ টি রাইড রয়েছে। যেখানে একটি খেলনা ট্রেন, একটি গোলাকার মেরি গো রাউন্ড রাইড ও একাধিক হুইল রাইড রয়েছে। ১৯৯২ সালে এ পার্কে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে সৌজন্য হিসেবে একটি জেট বিমান দেয়া হয়।। প্রতি রাইড ৮ টাকা হারে ৬ টি রাইড ব্যবহার করতে দেয়া হয়। প্রতি শুক্রবার পার্কটি ২.৩০-৭.৩০ টা পর্যন্ত চালু থাকে। রবিবার ছাড়া শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার ২.০০- ৭.০০ টা পর্যন্ত রাইডগুলো চালু থাকে। ঢাকার এই শিশুপার্কে প্রতিদিন ছয় হাজারের অধিক মানুষ এসে থাকে। আর ইদুল ফিতর ও ইদুল আজহার মত আনন্দঘন সময়ে তা কয়েকগুন বেড়ে যায়।

ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের মানুষ সপরিবারে একটু স্বস্তি ও আনন্দের জন্য আসে শাহবাগের শহীদ জিয়া শিশুপার্কে। কর্মব্যস্ত শহর রাজধানীতে যারা বসবাস করেন তাঁরা খুব সহজেই অবসর বা ছুটির দিনে প্রিয় সন্তানদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার প্রাণ কেন্দ্র শাহবাগে অবস্থিত শহীদ জিয়া শিশু পার্কে। স্বল্প সময় ও অল্প খরচে বিনোদনের জন্য কিছুটা সময় কাটিয়ে আসতে পারেন এই শিশু পার্ক থেকে। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উত্তর পাশে গড়ে ওঠা শিশুপার্ক শিশু-কিশোরদের আনন্দের অন্যতম কেন্দ্র। টয় ট্রেন, ফাইটার জেট, মেরি গো রাউন্ড, ফেরিস হুইল স্কেটিং রিংক ছাড়াও এখানে আরও রয়েছে বেশ কিছু চমকপ্রদ রাইড। ঘুরতে ঘুরতে হয়তো আপনার কানে ভেসে আসবে চিরচেনা কোনও গানের সুর, আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী সাথী মোদের ফুল পরী, লাল পরী নীল পরী

আপনিও তখন হারিয়ে যাবেন আপনার ছেলেবেলায় । আপনার ছেলেবেলার স্মৃতিকে চাঙ্গা করে নেবার এইতো সুযোগ । তাহলে আর দেরী না করে সামনের ছুটির দিনটিতেই বেড়িয়ে পড়ুন আপনার ছোট্ট সোনামণিকে নিয়ে আর তাকে পরিচয় করিয়ে দিন সবুজ প্রকৃতি, ফুল-পাখি সহ মজার মজার সব রাইডের সাথে।
 শহীদ জিয়া শিশু পার্ক শাহবাগে অবস্থিত। সাপ্তাহিক বন্ধ রোববার। প্রতিটি রাইডে চড়ার জন্য টিকিট দরকার হয়।
জাতীয় স্মৃতিসৌধ : 
ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কি. মি. দূরে সাভার থানার নবীনগরে  জাতীয় স্মৃতিসৌধ অবস্থিত । এ স্থানটি নির্বাচনের অন্যতম কারণ ছিল দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এখানে অনেক গণকবর আবিস্কৃত হয়েছিল । বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধকে চিরস্মণীয় করে রাখার জন্য এ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয় । অধিগ্রহণকৃত ৮৪ একর জমির মাঝে প্রায় ৬৪ একর জুড়ে রয়েছে সবুজ ভুমি। ৪০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে স্মৃতিসৌধ । ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর প্রথম বিজয় দিবসে জাতির জনক শেখ মজিবুর রহমান এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন । ১৯৮২ সালের আগষ্ট মাসে সৌধের নির্মাণ কাজ শেষ হয় । জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল কাঠামোর নক্সা তৈরি করেন স্থপতি মইনুল হোসেন । কংক্রিট নির্মিত ৭ টি ত্রিভূজাকৃতির স্তম্ভ দিয়ে মূল সৌধ গঠিত , যা ছোট হতে ধীরে ধীরে উচু হয়ে উপরে উঠে গেছে । এর উচ্চতা ১৫০ ফুট । প্রথম স্তম্ভটির উচ্চতা কম হলে ও প্রস্তে সবচেয়ে বড় । এটিকে আন্দোলনের সূচনা  অর্থাৎ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনকে বোঝানো হয়েছে । পরবর্তী স্তম্ভগুলো দ্বারা যথাক্রমে ১৯৫৪, ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৬৬৯ এবং ১৯৭১ কে বুঝানো হয়েছে । সর্বোচ্চ স্তম্ভটির দ্বারা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে বুঝানো হয়েছে । এই স্মৃতিসৌধ বৈশিষ্ট্য হলো এক এক দিক থেকে এক এক রকম আকৃতির মনে হয় । এটি শুধু স্মৃতিসৌধ নয় । এটি একটি পূনাঙ্গা কমপ্লেক্স । এখানে রয়েছে আকর্ষণীয় প্রশস্ত প্রবেশ পথ , গাড়ি পার্কিং এর সুব্যবস্থা । প্রবেশ পথের দু ,পাশে নানা জাতের ফুলগাছ  পাশেই আছে কৃত্রিম জলাশয় , যেখানে স্মৃতিসৌধ ছবি প্রতিফলিত হয় । আরো রয়েছে উন্মুক্ত মঞ্চ, সেতু, ফুলের বাগান অভ্যর্থনা কেন্দ্র ও হেলিপ্যাড , মসজিদ রেস্তোরা এবং একটি মনোরম সবুজ শ্যামল বনানী । এ বনানীতে দেখা যায় নানা জাতের ফলজ , বনজ ও ঔষধি গাছের সমাহার । আধুনিক  স্থাপত্য নক্সার এক অপূর্ব নিদর্শন এ স্মৃতিসৌধ দেখার জন্য সারা বছর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লোকের  ভিড় লেগে থাকে ।







সাভারে অবস্থিত আমাদের অহংকার জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এটি দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে ঢাকার সাভারে।
যেভাবে যাবেন, ঢাকায় বেড়াতে এসে যোগাযোগ করে নিতে পারেন নির্ধারিত তথ্যকেন্দ্র থেকে। প্রতিটি জায়গায় বাস, সিএনজি, রিকশা চলাচল করে।

লালবাগ কেল্লা
লালবাগ কেল্লার নির্মাণ ইতিহাস
লালবাগ কেল্লার নির্মাণ ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, লালবাগ কেল্লার নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র মুহাম্মদ আজম শাহ। তিনি ১৬৭৮ সালের ২৯ জুলাই বাংলার সুবেদার হিসেবে ঢাকায় আসেন। মাত্র একবছর তিনি সুবেদার ছিলেন। এর মধ্যেই তিনি বুড়িগঙ্গার তীরে এক প্রাসাদ-দুর্গ নির্মাণকাজে হাত দেন। পিতার নামানুসারে এর নাম রাখেন কিল্লা আওরঙ্গাবাদ। পরবর্তী সময়ে নাম হয় লালবাগ কেল্লা। অনেকে মনে করেন এ এলাকায় লাল গোলাপের বাগান ছিলো। সেই থেকে এলাকার নাম এবং এলাকার নামে কেল্লার নামকরণ হয়।
পরবর্তীকালে মারাঠাদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য আজম শাহকে ঢাকা থেকে চলে যেতে হয়। যাওয়ার সময় তিনি নতুন সুবেদার শায়েস্তা খাঁকে কেল্লার কাজ শেষ করার অনুরোধ করে যান। শায়েস্তা খাঁ কেল্লার কাজ সম্পন্ন করতে না পারলেও তার কন্যা পরীবিবির সমাধির কাজ শেষ করেছিলেন।


কি দেখতে পাবেন
কেল্লার অভ্যন্তরে রয়েছে একটি হাম্মামখানা বা গোসলখানা, দরবার হল, মাটির প্লাটফরম, ঝর্ণা, জলাধারা, তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ। মসজিদের ছাদে তিনটি গম্বুজের গোড়ার অংশ অষ্টকোণাকৃতি ড্রামের আকারের এবং পাতার নকশায় অলংকৃত। এতে রয়েছে পাড় বাঁধানো একটি পুকুর ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নির্মিত জাদুঘর।
কেল্লার উত্তর-দক্ষিণে অবস্থিত প্রধান ফটক, উত্তর তোরণ, পশ্চিম তোরণ ও তিনতলাবিশিষ্ট আকর্ষণীয় স্থাপত্য নিদর্শন হচ্ছে দক্ষিণ তোরণ। তোরণের সম্মুখে দুপাশে তিনধাপে উপরে উঠেছে। প্রথম ধাপ একটি অর্ধগম্বুজ ছাদবিশিষ্ট আস্তরে তৈরি প্যানেল দ্বারা অলংকৃত। দরবার হলকে জাদুঘর হিসেবে রূপান্তরিত করা হয়। জাদুঘরে রয়েছে মোগল আমলের অস্ত্রশস্ত্র, পান্ডুলিপি, মুদ্রা, মৃৎশিল্প, কার্পেট, চিত্র, হস্তলিপি ও রাজকীয় ফরমান।
দর্শনার্থীর ভিড়
মোগল আমলের অন্যতম স্থাপত্য নিদর্শন ঢাকার লালবাগ কেল্লায় দর্শনার্থীর সমাগম দিন দিন বেড়েই চলেছে। ইতিহাসের সাক্ষী এ কেল্লা প্রতিদিনই হাজার হাজার দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী, প্রতিবছর এখানে গড়ে প্রায় ৩০ লাখ দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। প্রতিদিন লালবাগ কেল্লা দেখতে আসে দেশি-বিদেশি প্রায় ১০ হাজার দর্শনার্থী। এর মধ্যে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ দর্শনার্থী রয়েছে। বিদেশি দর্শনার্থীরা এখানে কেল্লার ইতিহাস জানতে আসেন। সাধারণ দর্শনার্থী ১০ টাকা এবং বিদেশি দর্শনার্থীদের প্রবেশ ফি ১০০ টাকা নেয়া হয়। বার্ষিক টিকিট বিক্রির আয় সাড়ে ৩ কোটি টাকা
লালবাগ কেল্লার সময়সূচী
লালবাগ দুর্গের গ্রীষ্মকালীন (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) সময়সূচি হলো সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আর শীতকালীন (অক্টোবর থেকে মার্চ) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা। মাঝে ১টা থেকে ত্রিশ মিনিটের মধ্যাহ্ন বিরতি। শুক্রবারে মধ্যাহ্ন বিরতি থাকে ১২টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা ৩০ মিটিন পর্যন্ত। রোববার পূর্ণ দিবস, সোমবার অর্ধ দিবস এবং সব সরকারি ছুটির দিনগুলোতে লালবাগ দুর্গ বন্ধ থাকে।

No comments

Powered by Blogger.